হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনী বই - Part 19

হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনী বই - Part 19

রাসূল্লাহ্ (সাঃ) ক্রোধ

বিবি আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছিলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সম্মুখে কথায় কথায় যদি কখনও বিবি খাদীজা (রাঃ)-এর কথা উত্থাপিত হত তবে আর রক্ষা ছিল না; নবী (সাঃ) যে তাঁর প্রশংসা আরম্ভ করে দিনে, আর তা মোটেই ফুরাতে চাইত না । এভাবে তাঁর আত্মার প্রতি শুভ কামনা ও দোয়াও চলতে থাকত একদিন এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বিবি খাদীজা (রাঃ)-এর জন্য একাধারে বহুক্ষণ ধরে দোয়া করতে লাগলেন ।

তখণ আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বললাম, হে আল্লাহ্ নবী (সাঃ)! আপনি এক বৃদ্ধার কথা কেন এমন করে বার বার কলতেছেন? 

দয়াময় আল্লাহ্ তায়ালা তো এখন আপনাকে তদপেক্ষা উত্তম তরুণী স্ত্রী দান করেছিল।
আমার মুখে এ ধরনের কথা শ্রবণ করে তিনি এমন ক্রোধান্বিত হলেন যে, তাঁর মস্তিষ্কের সম্মুখ ভাগের পবিত্র কেশরাজি যেন থর থরে করে কাঁপতে লাগল । 

আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ অভূতপূর্ব ক্রোধের ভাব দেখে অত্যধিক লজ্জিত ও ভীত হলাম । আল্লাহ্র কাছে এ বলে প্রার্থনা করতে লাগলাম যে,
মাবুদ! আপনি যদি এইবারের মত নবীজীর (সাঃ) ক্রোধ প্রশমিত করে দেন, তবে আর কোনদিন আমি এ জাতীয় কথা মুখে আনব না ।

কিছুক্ষণ পরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কিঞ্চিৎ শান্ত হয়ে বললেন, আয়েশা! তুমি এরূপ কথা কেমন করে উচ্চারণ করলে?

তুমি কি বিবি খাদীজা (রাঃ)-এর কথা একটি বারের জন্যও ভেবে দেখেছ! যখন প্রায় প্রতিটি লোক আমার নবুয়ত অমান্য ও অস্বীকার করেছিল, সেই মুহূর্তে সে আমার উপর ঈমান আনছিল ।
আমি আল্লাহ্ শপথ করে বলছি, আল্লাহ্ আমাকে এখনও বিবি খাদীজা * (রাঃ) হতে উত্তম স্ত্রী দান করেননি!

বিবি আশেয়া (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এহেন মন্তব্য শুনে আমি প্রতিজ্ঞা করলাম যে, জীবনে আর কোনদিন আমি বিবি খাদীজা (রাঃ) কোনরূপ খারাপ বাক্য মুখের কাছেও আনব না ।

বিবি হাওয়া ও খাদিজা (রাঃ)

হাদীসে বর্ণিত আছে, একদিন হযরত আদম (আ) বলছিলেন যে, নিশ্চয়ই আমি হাশরের মাঠে মনুষ্য জাতির সরদার হব; (যেহেতু তিনি ছিলেন আদিম মানব বা মনুষ্য জাতির পিতা)।

তবে আমার সন্তানদের মধ্যে আহমদ [মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নামক এক পয়গম্বর- তিনি দুইটি কারণে আমা অপেক্ষা উত্তম হবেন। একটি কারণ এই যে, তাঁর পত্নী তাঁকে উপকার ও সহায়তা করবেন। পক্ষান্তরে আমার পত্নী অপকার ও ক্ষতির উছিলা ছিল ।
দ্বিতীয় কারণ, প্রতিটি মানুসের সাথে একজন করে ফেরেশতা ও শয়তান থাকে । 

এ ব্যাপারে আমার বংশের সেই পয়গম্বরকেই আল্লাহ সাহায্য করবেন । ফলে তাঁর সঙ্গী শয়তান আমার অবাধ্য ও বিরোধী ছিল এবং তার ছলনায় পড়ে আমার অপকার ও ক্ষতি হয়েছিল । এ হাদীসের দ্বার পরিষ্কারভাবে বুঝা যায় যে, হযরত আদম (আ) তাঁর উক্তরূপ উক্তি দ্বারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) প্রশতা এবং প্রধানা পত্নী খাদীজা (রাঃ)-এর দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। 

কারণ, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) সাহায্য সহায়তা এবং বেশি উপকার তাঁর দ্বারাই সাধিক হয়েছিল । অন্য কোন পত্নী দ্বারা ততখানি হয়নি । হযরত আদমের (আ) স্ত্রীর নাম বিবি হাওয়া। 

বিবি হাওয়ার দ্বারা হযরত আদমের (আ) কিরূপে ক্ষতি ও অপকার সাধিক হয়েছিল তা বর্ণনা করছি
বেহেশতে আল্লাহ্ কর্তৃক নিষিদ্ধ গন্ধম ফল শয়তানের প্ররোচনায় বিবি হাওয়াই আদম (আ)-কে খেতে দিয়েছেন এবং নিজেও বক্ষণ করেছিলেন।

এ ফল খাওয়া তাঁদের মলমূত্রের বেগ হল কিন্তু বেহেশতো মূলমূত্র ত্যাগের জায়গা নয়। তাই আল্লাহ্ তাঁদেরকে বেহেশত হতে এ চিরদুর্যোগময় পৃথিবীর বুকে নিক্ষেপ করলেন । তাঁদের এতবড় ক্ষতির কারণটি ঘটিছিল বিবি হাওয়ার ভুল বা ত্রুটির মধ্য দিয়ে ।

পক্ষান্তরে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বিবি খাদীজা (রাঃ) জীবনে এমন একটি ভুল বা ত্রুটি করেন নি । যাতে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) সামান্য মাত্র ক্ষতি হতে পারে।
বরং প্রতিটি মুহূর্তে তিনি স্বামীর প্রতি সজাগ, সক্রিয় ও সৎ পরামর্শদায়িনী ছিলেন, যাতে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর দ্বারা সীমাহীন উপকার ও সাহায্য হয়েছে।

বিবি হাওয়া ও খাদিজা (রাঃ)

হাদীসে বর্ণিত আছে, একদিন হযরত আদম (আ) বলছিলেন যে, নিশ্চয়ই আমি হাশরের মাঠে মনুষ্য জাতির সরদার হব; (যেহেতু তিনি ছিলেন আদিম মানব বা মনুষ্য জাতির পিতা)।
তবে আমার সন্তানদের মধ্যে আহমদ [মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নামক এক পয়গম্বর- তিনি দুইটি কারণে আমা অপেক্ষা উত্তম হবেন। 

একটি কারণ এই যে, তাঁর পত্নী তাঁকে উপকার ও সহায়তা করবেন। পক্ষান্তরে আমার পত্নী অপকার ও ক্ষতির উছিলা ছিল । দ্বিতীয় কারণ, প্রতিটি মানুসের সাথে একজন করে ফেরেশতা ও শয়তান থাকে । এ ব্যাপারে আমার বংশের সেই পয়গম্বরকেই আল্লাহ সাহায্য করবেন । 

ফলে তাঁর সঙ্গী শয়তান আমার অবাধ্য ও বিরোধী ছিল এবং তার ছলনায় পড়ে আমার অপকার ও ক্ষতি হয়েছিল । এ হাদীসের দ্বার পরিষ্কারভাবে বুঝা যায় যে, হযরত আদম (আ) তাঁর উক্তরূপ উক্তি দ্বারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) প্রশতা এবং প্রধানা পত্নী খাদীজা (রাঃ)-এর দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। 

কারণ, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) সাহায্য সহায়তা এবং বেশি উপকার তাঁর দ্বারাই সাধিক হয়েছিল । অন্য কোন পত্নী দ্বারা ততখানি হয়নি ।
হযরত আদমের (আ) স্ত্রীর নাম বিবি হাওয়া। 

বিবি হাওয়ার দ্বারা হযরত আদমের (আ) কিরূপে ক্ষতি ও অপকার সাধিক হয়েছিল তা বর্ণনা করছি বেহেশতে আল্লাহ্ কর্তৃক নিষিদ্ধ গন্ধম ফল শয়তানের প্ররোচনায় বিবি হাওয়াই আদম (আ)-কে খেতে দিয়েছেন এবং নিজেও বক্ষণ করেছিলেন।

এ ফল খাওয়া তাঁদের মলমূত্রের বেগ হল কিন্তু বেহেশতো মূলমূত্র ত্যাগের জায়গা নয়। তাই আল্লাহ্ তাঁদেরকে বেহেশত হতে এ চিরদুর্যোগময় পৃথিবীর বুকে নিক্ষেপ করলেন ।

তাঁদের এতবড় ক্ষতির কারণটি ঘটিছিল বিবি হাওয়ার ভুল বা ত্রুটির মধ্য দিয়ে ।
পক্ষান্তরে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বিবি খাদীজা (রাঃ) জীবনে এমন একটি ভুল বা ত্রুটি করেন নি । যাতে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) সামান্য মাত্র ক্ষতি হতে পারে।

বরং প্রতিটি মুহূর্তে তিনি স্বামীর প্রতি সজাগ, সক্রিয় ও সৎ পরামর্শদায়িনী ছিলেন, যাতে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর দ্বারা সীমাহীন উপকার ও সাহায্য হয়েছে।

সাহাবী আবু সাইফ (রাঃ) কর্মকারের কাজ করতেন। এ কারণে তাঁর গৃহ প্রায় ধুঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকত । যখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর গৃহাভিমুখে গমন করতেন, দূর হতে প্রতিবেশিগণ দেখেই আবু সাইফকে দৌড়ায়ে গিয়ে খবর বলত। শুনে আবু সাইফ (রাঃ) ধূয়া বন্ধু করতে যত্নবান হতেন। আবু সাইফের গৃহেই ইব্রাহীমের অন্তিম রোগ দেখা দিল ।

সংবাদ শুনে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ব্যস্তভাবে পুত্রকে দেখতে গেলেন । রোগাক্রান্ত শিশুপুত্রের করুণ মুমূর্ষ অবস্থা দর্শন করে তাঁর মমতায় ভরা কোমল হৃদয় বিগলিত হলো এবং পবিত্র আঁখিযুগল হতে অশ্রু ঝরতে লাগল ।

ঐ রোগেই ইব্রাহীমের ইহজীবনের সমাপ্তি ঘটে। তাঁর মৃত্যুর তারিখ ছিল অষ্টম হিজরী সন।
জান্নাতুল বাকী নামক কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়, কাফন-দাফন হয়ে গেলে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) নিজ হাতে তাঁর কবরের উপর পানি ছিটায়েছিলেন।