হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনী বই - Part 24

হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনী বই - Part 24

হযরত খাদিজা (রাঃ)-এর জীবন থেকে শিক্ষা

মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন খাদিজা (রাঃ) -কে বিশ্ব জাহানের রমনী কুলের জননী হিসাবে সৃষ্টি করেছিলেন। যার কারণে মহানবী (সাঃ) ইসলাম প্রচারে প্রেরণা পেয়েছিলেন। সেই মহিয়সী রমনী জন্মগ্রহণ করেছিলেন আরবের এক ধনাঢ্য ব্যক্তি খুওয়াইলীদের ঘরে। জন্মের পর থেকেই খাদিজার চরিত্র ছিল নির্মল। 

পরবর্তীতে যৌবনে এই মহিলার দানশীলতা, পবিত্রতা, ধার্মিকতা সরা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল ।  জাতি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের লোক খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। তখন আরবে ইহুদী ও খৃস্টান সম্প্রদায় ছিল। ইহুদীগণের তাওরাত এবং খৃস্টানদের ইঞ্জিল ধর্মগ্রন্থ ছিল । 

সুতরাং ইহুদী এবং খৃস্টানরা অন্য কোন ধর্মগ্রন্থকে ঘৃণা করত। হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা তৎকালীন যুগেও ধর্মের কুসংস্কারকে পরিহার করে প্রকৃত বিষয়বস্তু জেনে নিয়েছিলেন।  তিনি আখেরী যামানার শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে পূর্ব থেকেই চিনতে পেরেছিলেন।

নারীজগতে হযরত খাদিজার (রাঃ) মর্যাদা

নারীজগতের খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর স্থান কত উর্দ্ধে এবং অন্যান্য নারীদের সাথে তাঁর ব্যবধান ও স্বাতন্ত্র্য কত বেশী । এ বিষয়ে প্রথমেই রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) একটি হাদীসে ফরমায়েছেন, “আসমান ও যমিনের মধ্যস্থলে যত রমণী আছে তন্মধ্যে বিবি মরিয়ম ও খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহাই সর্বোত্তম।”

এ হাদীসের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে মাজাহেরে হক নামক গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্র পূর্ব যুগের নারীদের মধ্যে বিবি মরিয়ম সর্বোত্তম ছিলেন এটা নিঃসন্দেহ। তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যমানার নারীদের মধ্যে বিবি খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা ও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর মর্যাদার আসন সবার উপরে। 

তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগের উম্মত তথা নরনারীগণ যেহেতু পূর্ববর্তী উম্মতগণ হতে উত্তম, সুতরাং এদিক দিয়ে বলা চলে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) পত্নী খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা ও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর মর্যাদা বিবি মরিয়ম হতে বেশী।

খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর শ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভের আর একটি প্রধান কারণ এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে আল্লাহ বিশ্ব-মানবের মুক্তিলাভের পথ প্রদর্শন করতে পাঠিয়েছিলেন এবং এ অনুসারে তাঁর চরিত্র, গুণ, যোগ্যতা, ও মর্যাদাও তাঁকে দান করা হয়েছিল। 

আর খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা কে আল্লাহ প্রেরণ করেছিলেন । 
চরম সংকট মুহূর্তে এ মহান পুরুষেরই প্রেরণাদায়িনীরূপে, উৎসাহ, মনোবল এবং কর্মোদ্দীপনা বৃদ্ধিকারিনীরূপে ও বিপদ-আপদ, বাধা-বিপত্তিতে উদ্ধারকারিণী ও পরামর্শ দায়িনীরূপে।

এ দিক দিয়ে খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা ব্যতীত পৃথিবীতে কোন নারী তো দূরের কথা কোন পুরুষ নবী-অলী, পয়গাম্বরও খাদিজার (রাঃ) সমতুল্য নয় ।
    সমাপ্ত